The spot-fin porcupine fish




The spot-fin porcupinefish (Diodon hystrix) নরম পাখনার পটকা মাছ। স্থানীয় মানুষের কাছে “পটকা” মাছ নামেই পরিচিত। এরা সাধারণত গড়ে ৪০ সেঃমিঃ পর্যন্ত লম্বা হয়। এদের দেহ লম্বা আর বড় চোখওয়ালা মাছ। কানের পাখনা গুলো বড় কিন্তু পেলভিক ফিন (বুকের পাখনা) নেই। লেজের পাখনাগুলো লাগানো একসাথে। শরীরের আবরণ মসৃণ কিন্তু আঁইশগুলো কাঁটায় পরিণত হয়েছে। 

শিকারীর হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে শরীরের ভিতরে পানির চাপ বাড়িয়ে ফুলে উঠে আর তাদের এই কাঁটাগুলো ছড়িয়ে দেয়।
  











এটা মানুষের খাদ্য তালিকায় নেই কিন্তু চীন, থাইল্যান্ড এর একটি ক্ষুদ্র অংশ খেয়ে থাকে। এটি খুবই বিপদজনক। কারন, এর দেহে যকৃত, চামড়ায় একধরনের বিষাক্ত পদার্থ টক্সিন ( tetrodotoxin ) বি্দ্যমান। এটি মানুষের দেহে প্রবেশ করার ২-৩ মিনিট পরেই মৃত্যুর মুখে পতিত হতে পারে।  

এরা নিশাচর প্রাণী। এদের ট্রপিকাল ও সাবট্রপিকাল অঞ্চলে বেশি পাওয়া যায়। পাথুরে সৈকত (Rocky shore), প্রবাল দ্বীপ (Coral reef) এরা থাকতে পছন্দ করে। এদের প্রধান খাবার সামুদ্রিক সজারু (sea-urchin), শামুক (Mollusc), কাঁকড়া (Crustacean)। 


  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • Twitter
  • RSS

উপকূলের পরিবেশ পরিচিত পর্ব- 3


মোহনাঃ
                                নদী পরিভ্রমণ করে যে স্থানে  সাগরের সাথে মিশেছে সেটা হল মোহনা।মোহনা হল নদী ও সাগরের মিলনস্থলসাধারণত নদীর মিঠা পানি ও সমুদ্রের উচ্চ লবণাক্ত পানি মিলিত হয়ে, মোহনায় ঈষৎ লবণাক্ত পানির মিশ্রণ তৈরি করে। মোহনা পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ অঞ্চল।এখানে উৎপাদক থেকে শুরু করে ১ম ,২য়, ৩য় ও সর্বভুক স্তরের খাদক পাওয়া যায়।এছাড়া অসংখ্য মাটির নিচের প্রাণী ও বিয়োজকের অভয়াশ্রয় এই মোহনা
উৎপত্তি অনুসারে মোহনাকে চার ভাগে ভাগ করা যায়। (১) নিচু নদী উপত্যকা (ডাওন রিভার ভ্যালী)।(২) বাঁধবিত্তিক মোহনা।(৩) গভীর খাঁদ বিশিষ্ট মোহনা।(৪) টেকটনিক প্লেট ।
সমুদ্রের পানির মিশ্রণের উপর ভীত্তি করে আরও চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যেমনঃ (১) ঈষৎ লবণাক্ত।(২) আংশিক লবণাক্ত (৩) লবণাক্ত মোহনা (৪) বিপরীত স্রোত মোহনা।

ম্যানগ্রোভ বনঃ  
                                উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ততা সহ্য করার উদ্ভিদকুল নিয়ে যে বন গঠিত হয় তাকে ম্যানগ্রোভ বলে। বাংলাদেশের একমাত্র ম্যানগ্রোভ বন হল সুন্দরবন।ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ এর বৈশিষ্ট্য এরা সমুদ্রের মোহনা বা লবণাক্ত পানির জোয়ার ভাটা অঞ্চলে জন্মে থাকে।“রাইজোপোরা” হল ম্যানগ্রোভ বনের প্রধান উদ্ভিদ।বাংলাদেশের সুন্দরবন ২২’৩২’’ উওর ও ৮৯’০৫’’ পূর্বে অবস্থিত।এর দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর ,পূর্বে চট্টগ্রাম বিভাগ, উত্তরে রাজশাহী বিভাগ এবং পশ্চিমে ভারতের সুন্দরবন। ভারত সীমান্তে সুন্দরবন প্রায় ৬০ ভাগ আর বাকি ৪০ ভাগ বাংলাদেশের।“সুন্দরি” নামক উদ্ভিদ থেকে এর নামকরণ করা হয়। বাংলাদেশের খুলনা বিভাগে সাতক্ষীরা , খুলনা ও বাগেরহাট অঞ্চলজুড়ে এর অবস্থান। “সুন্দরি ছাড়াও বাইন,কালো বাইন,সাদা বাইন,পশুর,গজারি ও গোলপাতা হল প্রধান বৃক্ষ।আর পশুর রাজা “রয়েল বেঙ্গল টাইগার” এই এলাকায় রাজত্ব করে আসছে যুগ যুগ ধরে।তবে পরিবেশ বিপন্ন হওয়ায় এদের সংখ্যা প্রায় ১০০ তে নেমে এসেছে।

  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • Twitter
  • RSS

উপকূলের পরিবেশ পরিচিত পর্ব- 2


সৈকতঃ
                                সমুদ্র উপকূল রেখার যে স্থলভাগে সমুদ্রের ঢৈউ বা জল আছড়ে পড়ে সেই স্থানকে সমুদ্রসৈকত বলে।সাধারণত উপকূলের যে অঞ্চলে জোয়ার-ভাটা সংগঠিত হয় সেটাই সৈকত নামে পরিচিত।এটি সাধারণত আলগা জড়পদার্থ,যেমনঃ বালি, শিলা, নুড়ি, বালু, কাকর প্রভৃতি বস্তু দিয়ে তৈরি হয়।কিছু স্থানে জীবজন্তুর মাধ্যমে যেমন, প্রাণীর খোলস, কঙ্কাল, দাঁত এবং কোরাল দিয়ে বিশেষ সমুদ্রেসৈকত গঠিত হয়।সৈকত তিন প্রকার।যেমনঃ বালির সৈকত, পাথুরে সৈকত, এবং  কাদার সৈকত।বাংলাদেশে তিন ধনের সমুদ্রসৈকত দেখতে পাওয়া যায়। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার একটি বালির সৈকত।সেন্ট-মার্টিন দ্বীপ পাথুরে সৈকত। এছাড়া কুতুবদিয়া কাদার সৈকত।


বদ্বীপঃ
                            নদীর মোহনায় কর্দম, পলি ও বালির সঞ্চয়ে ত্রিকোণাকার মাত্রাহীন “ব” অক্ষরের মতো সমুদ্ররেখা থেকে যে উচু স্থলভাগ গঠিত হয় তাকে বদ্বীপ বলে।নদী ও সাগরের মিলনস্থল মোহনায় নদীর স্রোতের বেগ এতই হ্রাস পায় যে, নদীবাহিত পলল তলানী আর পরিবাহিত হতে না পেরে মোহনায় সঞ্চিত হয় এবং চর জেগে ওঠার ফলে নদীস্রোত বাধাপ্রাপ্ত হয়ে চরের দুই পাশ দিয়ে প্রাবাহিত হয়।এতে চরের দুইপ্রান্ত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে ত্রিকোণাকার আকৃতি গঠন করে। উপকূল ঢালু বা নদীস্রোতকে বাঁধা প্রদান করার মত সমুদ্রস্রোত পর্যাপ্ত শক্তিসম্পন্ন না হলে বদ্বীপ গঠিত হবে না।বদ্বীপ গঠনকালে প্রথমে মোটা পলিকণা এবং পরে সুক্ষকণাসমূহ স্থির হয়।


বঙ্গীয় বদ্বীপঃ
                                হিমালয় হতে আগত গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র এবং মেঘনা নদীর অববাহিকায় বিপুল পরিমান পলি বয়ে এনে বাংলাদেশ বদ্বীপ সৃষ্টি করেছে।বিশ্বের বৃহত্তম বদ্বীপ এই বাংলাদেশ। হিমালয়ের বরফ গলিত পানি চীন,নেপাল,ভারত দিয়ে বয়ে আসে ,অজস্র পলি ,বালি,কাঁকড় নিয়ে আসে।যা সময়ের পরিক্রমায় পতিত হয়ে বঙ্গভূমি গঠিত হয়েছে।

দ্বীপঃ 
               চতুর্দিকে জল দ্বারা পরিবেষ্টিত স্থলভাগকে দ্বীপ বলে আর নিকটবর্তী একাধিক দ্বীপগুচ্ছকে একত্রে দ্বীপপুঞ্জ বলেদ্বীপ প্রধানত দুই রকমের হয় -- মহাদেশীয় দ্বীপ এবং মহাসাগরীয় দ্বীপএছাড়া কৃত্রিম দ্বীপও রয়েছে
ভূত্বক পরিবর্তনের কারনে দ্বীপ সৃষ্টি হতে পারে, যেমন মোহনার পরিবাহিত পলি সঞ্চিত হয়ে, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত থেকে, অথবা প্রবাল সঞ্চিত হয়ে এছাড়া টেকটনিক প্লেট এর স্থান্তরের ফলে সমুদ্র তলদেশের মাটি কিংবা লাভা উপরে উঠে এসে দ্বীপ গঠন করতে পারে
বাংলাদেশে মোট দ্বীপ সংখ্যা ৬০টিদক্ষিণ তালপট্টি ছিল বাংলাদেশের একেবারে দক্ষিণের দ্বীপএছাড়া পূর্বে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ একটি এবং একমাত্র প্রবাল দ্বীপএটি লম্বায় প্রায় বর্গ কি.মি চওড়া কোথাও ৭০০ মিটার আবার ২০০ মি
বাংলাদেশের বৃহত্তম দ্বীপ জেলা হল ভোলাভোলায় অসংখ্য দ্বীপ গড়ে উঠেছে
দক্ষিণ-পূর্বে একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ মহেশখালীএই দ্বীপে পাহাড়ের সমারহ হিন্দুদেরবদ্যনাথ মন্দিরএখানে অবস্থিত
মহাদেশীয় দ্বীপঃ অস্ট্রেলিয়া মহাদেশকে অনেক সময় বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ বলা হয় কারন এর চারদিক মহাসাগর বেষ্টিত কিন্তু দ্বীপের দিক দিয়ে উওর আমেরিকার গ্রিনল্যান্ড সর্ববৃহত্তর
এবং সবচেয়ে ছোট দ্বীপ "বিশ্বপ পাথর" (bishop rock) ইউরোপের পশ্চিম প্রান্তের চিলিয়ে আইস্লে অঞ্চলে, এছাড়া "caye chapel" দ্বীপ আমেরিকার বেলজি অঞ্চলে অবস্থিত


অসংখ্য দ্বীপ নিয়ে গঠিত রাষ্ট্র হল ইন্দোনেশিয়াপ্রায় ১৭,৫০৮-১৮,৩০৬ টি দ্বীপ রয়েছেসরকারিভাবে ,৮৪৪টি দ্বীপের নিবন্ধন আছে, যার মাঝে ৯০০ টির বেশি বসবাস অযোগ্য

  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • Twitter
  • RSS

উপকূলের পরিবেশ পরিচিত পর্ব- ১

বাংলাদেশের উপকূলঃ  


বাংলাদেশের আয়তন , ৪৭,৫৭০ বর্গ কিঃ মিঃ বর্তমান জনসংখ্যা ১৭ কোটি জনসংখ্যার বসবাস বাংলাদেশের উপকূলীয় তটরেখার দৈর্ঘ্য ৭১০ কিঃ মিঃদেশের প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ এলাকা নিয়ে উপকূলীয় অঞ্চল এই বিশাল তটরেখায় বসবাস করে কোটির উপরে মানুষ এখানকার সমুদ্র, নদী বেশিষ্টি ভূমিতে বসবাসরত জনগণের অন্যতম জীবিকা হলো, কৃষি মৎস্য আহরণএই উপকূল এলাকা সংকট সম্ভাবনার অঞ্চল হিসাবে পরিচিত এখানে ঘূর্ণিঝড়, জলেচ্ছাস, নদী ভাঙন এর মতো প্রাকৃতিক দূর্যোগ এর ঝুঁকি যেমন বেশি, তেমনি অর্থনৈতিক সম্ভবনাও রয়েছে প্রচুর
বঙ্গোপসাগরকে ঘিরে জোয়ার ভাটার প্রভাব,নোনা পানির অনুপ্রবেশ এবং ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছাস, এই ধরণের প্রভাবযুক্ত ১৯টি জেলার ১৪৭টি উপজেলা উপকূলীয় ভূমি হিসাবে অন্তভূক্ত এর মধ্যে উপকূলীয় ১৪৭টি উপজেলার মধ্যে ৪৮টি উপজেলা নানান প্রাকৃতিক কারণে ঝুকিপূর্ণবঙ্গোপসাগরকে ঘিরে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এই উপকূলীয় অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের মোট জনসংখ্যা হচ্ছে ৩ কোটি ৪৮ লক্ষ তার মধ্যে ৪৯ শতাংশ মহিলা এই অঞ্চলের প্রচুর সম্পদ থাকা সত্বেও দারিদ্র অপেক্ষাকৃত বেশী জনসংখ্যার ৫২শতাংশ দরিদ্র এবং ২৫ শতাংশ চরম দরিদ্র মাথা পিছু আয় ১ ডলারের নিচে জনসংখ্যার ৪৬ শতাংশ ১৫ বছর বয়সের নিচে কৃষি শ্রমিক, ক্ষুদ্র কৃষক, জেলে এবং শহর এবং দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ৬৮ লক্ষ ৫০ হাজার এর মধ্যে মোট জনসংখ্যার ৭১ শতাংশ যায়দেশের এই এক তৃতীয়াংশ অঞ্চল কে ঘিরেই মুলতঃ অর্থনৈতিক বৈদেশিক আমদানী ও রপ্তানি বানিজ্য পরিচালিত হয়ে থাকে

উপকূলঃ


         সমুদ্র উপকূল হল স্থলভাগ ও জলভাগের মিলনস্থল।স্থলভাগ ও জলভাগকে বিভক্তকারী রেখাকে উপকূলীয় রেখা বলে।উপকূলীয় অঞ্চল উপকূলীয় রেখা থেকে সমুদ্রের দিকে একটি বলয় জুড়ে বিস্তৃত্ব।ভূপ্রাকৃতিক অবস্থার উপর উপকূলীয় অঞ্চলের গঠন ও আকার নির্ভর করে থাকে।উপকূলীয় রেখা দুই প্রকার।একটি সামুদ্রিক প্রক্রিয়ার দ্বারা যেমন, তরঙ্গের দ্বারা ক্ষয়সাধন, পলি সঞ্চয় অথবা সামুদ্রিক জীব ও উদ্ভিদের প্রভাবে এবং দ্বিতীয়টি গঠিত হয় প্রধানত ভূভাগে ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যেমন, আগ্নেয় অগ্ন্যুৎপাতে ও ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট উপকূল।ভূ-আন্দোলনে সমুদ্র উপকূলের উত্থান বা পতনের ফলে ভূভাগের পরিবর্তন লক্ষনীয়।মাঝে মাঝে এই দুই প্রকারের উপকূলীয় ভূপ্রকৃতি দেখা যেতে পারে। ( সূত্রঃ আধুনিক সমুদ্রবিজ্ঞান)
  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • Twitter
  • RSS

নীলাভ জলরাশি বা (Milky Sea Phenomenon)



মালদ্বিপের রাতের সমুদ্র সৈকত

ভারত মহাসাগরের মালদ্বীপে রাতের বেলায় নীলাভ জলরাশির আবির্ভাব। আসিফ সৈকতে দাঁড়িয়ে এক দৃষ্টিতে দেখতে দেখতে ভাবল; রাতের বেলায় পানির রঙ নীলাভ হল কেন ?” সে গুগুল অনুসন্ধানে (Milky Sea Phenomenon) দিয়ে, উন্মোচন করল সমুদ্রের এক মজার রহস্য। 


সাধারণত vibrio নামের একধরনের সামুদ্রিক ব্যাক্টেরিয়ার উপস্থিতির জন্য এই রঙিন আভার উদ্ভব। এ ঘটনাটি হল জীববিকিরণ (Bioluminescence)।Noctiluca scintillans নামে সামুদ্রিক ডাইনোফ্লাজিলেট (dinoflagellate) ক্ষুদ্র প্রাণিতে এ ব্যাক্টেরিয়ার বসবাস। 

পৃথিবীতে খুব কম প্রাণিই চোখে পড়ে, যারা রাতের বেলায় আলো প্রদর্শন করে। আর আমাদের চেনা-জানা কাছের প্রাণিটি হল “জোনাকি পোকা”। ছোটবেলায় এর পিছনে ঘুরে ঘুরে, হাতে রে, কিংবা বোতলে জমিয়ে খেলা করিনি খুবই কমজনই আছি। “জোনাকি” এর এমন রহস্যের কারন তাদের দেহে বিদ্যমান “লুসিফেরিন” ও “লুসিফেরেজ” নামের একধরনের এনজাইম (উৎসেচক) বা রাসায়নিক পদার্থ।  এ “লুসিফেরিন” শরীরে বিদ্যমান অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে কার্বন-ডাই-অক্সাইড (CO2) ও আলোশক্তি(Light Energy) উৎপন্ন করে। এই আলোকশক্তিই নীলাভ হয়ে দেখায় যায়, যা প্রকৃতপক্ষে সাদা। যাকে নামকরন করা হয় (Milky Sea Phenomenon)। সমুদ্রে এদের সংখ্যা অগণিত। সামান্য ঢেউ এর কারনে এরা জ্বলে উঠে।



গভীর সমুদ্রতলে বিভৎস জীববিকিরণ মাছ।

সামুদ্রিক কিছু ব্যাক্টেরিয়ার মাঝে প্রতিনিয়ত এই রাসায়নিক বিক্রিয়া হচ্ছে। মাঝে মাঝে খবর পাওয়া যায় সমুদ্রের গভীরে অন্ধকারে বিভৎস প্রাণি আলো উৎপন্ন করতে পারে। কিন্তু যেসব প্রাণি আলো তৈরি করে, তাদের চোখে বা গায়ে এই ব্যাক্টেরিয়ার বসবাস। আর এই নীলাভ আলো দিয়ে তারা শিকারকে আকর্ষণ করে বা শিকারি থেকে রক্ষা পায়।






  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • Twitter
  • RSS

"প্রবাল প্রাচীর" সেন্টমার্টিন, বাংলাদেশ।


সেন্টমার্টিন দ্বীপে আমরা কম বেশি গিয়েছি। হুমায়ূন স্যারের সেই স্বর্গীয় সুভা ছেড়াদ্বীপ, বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণে ৮ বর্গ কিঃমিঃ নিয়ে যেন সমুদ্রের প্রতিটি ঢৈউ এর সাথে মিথালি দিচ্ছে। একমাত্র প্রবাল (Coral) দ্বীপ। সবার চোখের সামনে শুধু পাথরের কারুকাজ মনে হলেও, এটি আসলে একটি প্রাণি। বিজ্ঞানের ভাষায় নিডারিয়া পর্বের, এন্থোযোয়া শ্রেণীর একটি বিশেষ সামুদ্রিক জীব। এদের দেহ ক্যালসিয়াম কার্বনেটের মাধ্যমে গঠিত যার কারনে এরা পাথুরে আকার ধারণ করে। কিন্তু কিছু কিছু প্রবাল প্রজাতি নরম, স্পঞ্জ এর মত হয়ে থাকে।
এরা সাধারণত উপকূলীয় স্বচ্ছ পানিতে প্রাবাল কলোনি বা প্রবাল প্রাচীর তৈরি করে উপকূলকে রক্ষা করে। এদের একটা দেহ অংশকে “পলিপ” খন্ড বলা হয়, যা গ্যামেট তৈরির মাধ্যমে বংশবিস্তার করে। তাদের নিজস্ব কিছু আত্নরক্ষার জন্য কর্ষিকা (ট্যান্টাকল) আছে , শিকারি প্রাণিদের গায়ে এটি তীরের মত ছুড়ে দিয়ে অজ্ঞান করে দিতে পারে।

তবে এই প্রবালগুলো এক এক রঙের হয়ে থাকের। এই মজার রহস্য হল, এর দেহে মিথস্ক্রিয়ভাবে বসবাসকারি কিছু (জুজেন্থ্যালা নামক) শৈবাল,যারা সালোকসংশ্লেষন প্রক্রিয়ায় খাদ্য তৈরি করে। শৈবাল এর প্রয়োজনীয় কার্বন-ডাই-অক্সাইড, নাইট্রোজেন যোগান দেয় প্রবাল, আর অক্সিজেন, খাদ্য সরবারহ করে শৈবাল। শৈবালের বিভিন্ন রঙের জন্য প্রবালের রঙ ভিন্ন হয়।


প্রবাল প্রাচীর শুধু সামুদ্রিক প্রাণিই নয়, এটি অন্যান্য প্রাণির আবাসস্থল, চারণভূমি, অভয়াশ্রম, খাদ্য সরবারহের গুরুত্বপূর্ণ স্থান।  এটি পৃথিবীর ২৫% মাৎস্যক্ষেত্র উৎপাদনে সহায়তা করে। সামুদ্রিক পরিবেশ সুন্দর ও সুস্থ রাখতে এর ভূমিকা অপরিসীম।
কিন্তু বৈশ্বিক উষ্ণায়ণ,সামুদ্রিক দূষণ, নৌকার নোঙর, দর্শকদের অসচেতনতা, প্রবাল পাচার ইত্যাদি কারনে এর সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। বিশ্বের বৃহত্তম প্রবাল প্রাচীর “গ্রেট বেরিয়ার রিফ” ২৩০০ কিঃমিঃ যার ৮০% প্রবাল ধ্বংস হয়ে গেছে এখনই। কিন্তু প্রবাল বছরে মাত্র ১-২ সেঃমিঃ বাড়তে পারে। বৈশ্বকি উষ্ণায়ণের ফলে "প্রবাল বিবর্ণ"



(Coral Bleaching) এর কারনে প্রবাল প্রাচীর ধ্বংস হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
আমাদের সেন্টমার্টিন এর প্রবাল ধ্বংসের পথে। কারন আমরা কখনো আসল প্রবাল দেখতে পারিনা।


  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • Twitter
  • RSS

Blue Planet " নীল গ্রহ"

১২ সেপ্টেম্বর ২০০১ সালে, ব্রিটিশ টিভি সংবাদসংস্থা   BBC  এর প্রযোজনায় পৃথিবীর জীববৈচিত্র নিয়ে ধারণ করা হয় "ধারাবাহিক প্রাকৃতিক প্রামাণ্যচিত্র". যেটি পরবর্তিতে  Blue Planet বা "নীল গ্রহ" নামে  জনপ্রিয় হয়ে উঠে। এই প্রামাণ্যচিত্রটি বিবৃতি করেন David Attenborough. মিউজিক কম্পোজ করেন   George Fenton. নির্বাহী প্রযোজক হলেন Alastair Fothergill.
                                                

৫ বছরে মোট ২০০ টি স্থান পর্যবেক্ষণ করার মাধ্যমে এ  প্রামাণ্যচিত্রটি ধারণ করা হয়। পৃথিবী নামের নীল গ্রহটি এখনো রহস্যের আধার। ২৯ ভাগ স্থল আর ৭১ ভাগ জল নিয়ে গঠিত এই রহস্যঘন নীল পৃথিবীর এখনও অনেক স্থান অনাবিষ্কৃত রয়েই গেছে।  এই নিগূঢ় রহস্য উন্মোচন করতে বিভিন্ন পর্ব নিয়ে ধারাবাহিকভাবে পরিচালিত  হচ্ছে "Blue Planet".

এছাড়া  ধারাবাহিক প্রামাণ্যচিত্রগুলো ছিল " দ্য লাইফ অব ম্যামলস" (২০০২) এবং " প্ল্যানেট আর্থ" (২০০৬)।
৫০ মিনিটের এই কাহিনীতে পৃথিবীর অতল সমুদ্রের জীবজগৎ ও জীবের আচার ব্যবহার এবং তাদের জীবন-যাপনের বিভিন্ন বিষয় আন্ডার-ওয়াটার ফটোগ্রাফির মাধ্যমে ফুটে উঠে।

প্রথম টিভি শোটি ১২ মিলিয়ন মানুষ দেখেছে আর ৩০% সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে শেয়ার হয়েছিল।এর সাফল্য এর জন্য, ছন্দ এবং দৃশ্যপটে Emmy ও BAFTA  টিভি পুরুষ্কারও পেয়েছে।

২০১৮ সালে, David Attenborough এর অনুসন্ধানে প্রাপ্ত ফাইটোপ্লাঙ্কটন এর নাম  (Syracosphaera azureaplaneta) একজন বিজ্ঞানীর নামে রাখা হয়।

David Attenborough তার প্রথম প্রামাণ্যচিত্রে বলেনঃ-
   
     "Our planet is a blue planet: over seventy percent of it is covered by the sea. The Pacific Ocean alone covers half the globe. You can fly across it non-stop for twelve hours and still see nothing more than a speck of land. This series will reveal the complete natural history of our ocean planet, from its familiar shores to the mysteries of its deepest seas."

এই প্রামাণ্যচিত্রের পর্বগুলো যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ টি দেশে প্রচারিত হয়েছে। এমনকি ডিস্কভারি চ্যানেল "Discovery Channel" এ Pierce Brosnan  বিবৃতির মাধ্যমে সারা বিশ্বে দেখানো হচ্ছে। এর নাম পরিবর্তন করে  " দ্য ব্লু প্ল্যানেটঃ সীস অব লাইফ" দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে।  যা প্রথম দিকে "ওশান ওয়ার্ল্ড" নামে সম্প্রচারিত হয়।

তথ্যসূত্রঃ https://en.m.wikipedia.org/wiki/The_Blue_Planet


  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • Twitter
  • RSS